You are currently viewing খেজুরের উপকারিতা | খেজুর খেলে কি ওজন বাড়ে

খেজুরের উপকারিতা | খেজুর খেলে কি ওজন বাড়ে

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। নিয়মিত খেজুর খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো।

খেজুরের কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা

১. হজমশক্তি উন্নত করে: খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং মলত্যাগ নিয়মিত করে।

২. শক্তির উৎস: খেজুরে প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুকটোজ) থাকে যা দ্রুত শক্তি প্রদান করে। এটি ক্লান্তি দূর করতে এবং শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৩. হাড় ও দাঁতের জন্য ভালো: খেজুরে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, এবং ফসফরাস থাকে যা হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এটি হাড়কে শক্তিশালী করে এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ করে।

৪. রক্তাল্পতা দূর করে: খেজুরে আয়রন থাকে যা রক্তাল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। এটি রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।

৫. মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে: খেজুরে ভিটামিন B6 থাকে যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটি স্মৃতিশক্তি উন্নত করে এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করে।

৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: খেজুরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটি বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে শরীরকে রক্ষা করে।

৭. গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য ভালো: খেজুরে ফোলেট থাকে যা গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য ভালো। এটি ভ্রূণের সুস্থ বিকাশে সাহায্য করে।

৮. ত্বক ও চুলের জন্য ভালো: খেজুরে ভিটামিন A ও C থাকে যা ত্বক ও চুলের জন্য ভালো। এটি ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং চুলকে সুস্থ রাখে।

৯. ওজন কমাতে সাহায্য করে: খেজুরে ফাইবার থাকে যা দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখে। এটি অতিরিক্ত খাওয়া রোধ করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।

১০. রোজা ভাঙার জন্য আদর্শ: খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকে যা রোজা ভাঙার জন্য আদর্শ। এটি দ্রুত শক্তি প্রদান করে এবং শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে। 

খেজুর খেলে কি প্রেসার বাড়ে

না, খেজুর খেলে সাধারণত প্রেসার বাড়ে না। বরং, খেজুর উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কারণ খেজুরে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আরও জানতে এখানে ক্লিক করুন

খেজুর খেলে কি ওজন বাড়ে

খেজুরে প্রচুর ক্যালোরি থাকায়, এটি ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। খেজুরের কার্বোহাইড্রেট শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে এবং ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।খেজুরের ফাইবার আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ণ রাখে, যার ফলে আপনি বেশি খেতে পারেন এবং ওজন বাড়াতে পারেন।

ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খেজুর

খেজুর হল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর খাবার হতে পারে, তবে সেগুলি পরিমিতভাবে খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। খেজুর ফাইবার, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম সহ পুষ্টিতে ভরা থাকে, যা সবই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। এগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের এর ভাল উৎস, যা কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

খেজুরের উপকারিতা | খেজুর খেলে কি ওজন বাড়ে - Fit Bay

খেজুর খাওয়ার নিয়ম

প্রতিদিন কয়টি খেজুর খাওয়া যেতে পারে

প্রতিদিন ৩-৫ টি খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যকর।তবে আপনার শারীরিক অবস্থা, বয়স, ওজন, এবং কার্যকলাপের উপর নির্ভর করে পরিমাণ পরিবর্তিত হতে পারে। যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে, তবে খেজুর খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

কখন খেতে হবে

  • খেজুর যেকোনো সময় খাওয়া যায়।
  • সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
  • ব্রেকফাস্ট বা নাস্তায় খেজুর খেলে দীর্ঘক্ষণ শরীরে শক্তি সঞ্চয় থাকে।
  • রমজান মাসে ইফতারের সময় খেজুর খাওয়া একটি ঐতিহ্য।
  • ব্যায়ামের আগে বা পরে খেজুর খেলে শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায়।

খেজুরের রসের উপকারিতা

১. শক্তির উৎস: খেজুরের রস প্রাকৃতিক শর্করা (গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ) সমৃদ্ধ, যা শরীরে দ্রুত শোষিত হয় এবং শক্তি প্রদান করে।

২. পুষ্টিগুণ: এতে প্রচুর ভিটামিন (বি১, বি২, বি৫, বি৬, সি), খনিজ (পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন), ফাইবার, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।

৩. পাচনতন্ত্রের জন্য: খেজুরের রসে থাকা ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পেটের সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা: এতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৫. রক্তাল্পতা: খেজুরের রসে থাকা আয়রন রক্তাল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।

৬. হাড় ও দাঁতের জন্য: খেজুরের রসে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের সুস্থতা বজায় রাখে।

৭. শরীর ঠান্ডা রাখে: খেজুরের রস শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং গরমের সময় শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।

খেজুর গুড়ের উপকারিতা

খেজুর গুড়ের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। খেজুর গুড়ের কিছু উপকারিতা নিচে উল্লেখ করা হলঃ

১) হাড় ও দাঁতের জন্য ভালো: খেজুর গুড় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়ামের একটি ভালো উৎস, যা হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

২) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: খেজুর গুড়ে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৩) হজমশক্তি উন্নত করে: খেজুর গুড়ে ফাইবার থাকে যা হজমশক্তি উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

৪) ঠান্ডা ও কাশি দূর করে: খেজুর গুড় ঠান্ডা ও কাশি দূর করতে সাহায্য করে।

৫) ত্বক ও চুলের জন্য ভালো: খেজুর গুড় ত্বক ও চুলের জন্য ভালো। এতে থাকা ভিটামিন এ ত্বক ও চুলকে সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান রাখতে সাহায্য করে।

৬) পুরুষদের জন্য উপকারী: খেজুর গুড় পুরুষদের জন্য উপকারী। এতে থাকা জিঙ্ক পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

খেজুরের উপকারিতা | খেজুর খেলে কি ওজন বাড়ে - Fit Bay

বাংলাদেশে পাওয়া যায় এমন কিছু জনপ্রিয় খেজুরের নাম ও তাদের বৈশিষ্ট্য

মাবরুম খেজুর – (Mabroom Dates) 

বৈশিষ্ট্য: বাদামি রঙের, আকারে ছোট, শক্ত, এবং মিষ্টি স্বাদের।

উৎপত্তি: মধ্যপ্রাচ্য

বিশেষত্ব: খাদ্যশক্তিতে সমৃদ্ধ, ভিটামিন এ, বি এবং খনিজ সমৃদ্ধ।

মেডজুল খেজুর – (Medjool Dates Price)

বৈশিষ্ট্য: বড় আকারের, চকচকে, বাদামী রঙের, নরম এবং মিষ্টি স্বাদের।

উৎপত্তি: মরক্কো

বিশেষত্ব: ফাইবার সমৃদ্ধ, হজমশক্তি বৃদ্ধি করে।

সাফাভি খেজুর– (Safawi Dates Premium Quality)

বৈশিষ্ট্য: বড় আকারের, বাদামী রঙের, নরম এবং মিষ্টি স্বাদের।

উৎপত্তি: সৌদি আরব

বিশেষত্ব: ভিটামিন B6, পটাসিয়াম, এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ।

সুগাই খেজুর – (Sugai Dates)

বৈশিষ্ট্য: কালো বাদামী রঙের, নরম, মিষ্টি এবং হালকা টক স্বাদের।

উৎপত্তি: ইরান

বিশেষত্ব: লোহা, ক্যালসিয়াম, এবং ফাইবার সমৃদ্ধ।

সুক্কারী খেজুর – (Sukkari Dates Price in Bangladesh)

বৈশিষ্ট্য: বড় আকারের, হালকা বাদামী রঙের, নরম এবং মিষ্টি স্বাদের।

উৎপত্তি: সৌদি আরব

বিশেষত্ব: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

আজওয়া খেজুর- (Ajwa Dates)

বৈশিষ্ট্য: কালো রঙের, ছোট আকারের, শক্ত, এবং মিষ্টি স্বাদের।

উৎপত্তি: সৌদি আরব

বিশেষত্ব: ঔষধি গুণ সমৃদ্ধ, হজমশক্তি বৃদ্ধি করে।

মরিয়ম খেজুর – (Maryam Date)

বৈশিষ্ট্য: বাদামী রঙের, লম্বাটে আকারের, নরম এবং মিষ্টি স্বাদের।

উৎপত্তি: ইরান

বিশেষত্ব: ভিটামিন A, C, এবং E সমৃদ্ধ।

খেজুর ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায়। যেমনঃ সুপারমার্কেট, ওণলাইন শপ (Online Shop), লোকাল শপ। তবে তিস্তা ফুড (Tista Food) এ অল্প টাকাতে ভালো মানের কোয়ালিটি ফুল (Quality Full) খেজুর পাওয়া যায়। তিস্তা ফুড এর খেজুর যা আপনাকে ওয়েট গেইন এবং ফ্যাট লস করতে সাহায্য করবে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

উত্তর: ১ কেজি খেজুরে প্রায় ৩,২৭০ ক্যালরি থাকে।

বিস্তারিত

  • একটি খেজুরে গড়ে ২৭ ক্যালরি থাকে।
  • ১ কেজি = ১০০০ গ্রাম।
  • সুতরাং, ১ কেজি খেজুরে (১০০০ * ২৭) = ২৭,০০০ ক্যালরি থাকে।
  • তবে, খেজুরের প্রকৃতি ও জাতের উপর ক্যালরির পরিমাণে কিছুটা তারতম্য হতে পারে।

জি, খেজুরে বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

  • ভিটামিন এ: এটি চোখের জন্য ভালো এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন বি কমপ্লেক্স: এটি শরীরের বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং শক্তি বৃদ্ধি করে।
  • ভিটামিন সি: এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের জন্য ভালো।
  • ভিটামিন কে: এটি হাড় ও দাঁতের জন্য ভালো।

এছাড়াও খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

ওজন কমাতে দিনে কতগুলো খেজুর খাওয়া উচিত তা নির্ভর করে আপনার বর্তমান ওজন, শারীরিক কর্মকাণ্ডের স্তর এবং অন্যান্য খাদ্য গ্রহণের উপর।

সাধারণভাবে, ওজন কমাতে চাইলে দিনে ২-৩ টি খেজুর খাওয়া যথেষ্ট। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ণ বোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, খেজুরে প্রাকৃতিক চিনি থাকে যা আপনার শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে।

খেজুর সারাদিনই খাওয়া যায়, তবে কয়েকটি সময় আছে যখন খেলে এর উপকারিতা আরও বেশি পাওয়া যায়। সেগুলো হলঃ সকালে খালি পেটে,ব্যায়ামের আগে ,ইফতারে এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে ।

মনে রাখবেন:

  • একবারে বেশি খেজুর খাবেন না।
  • ডায়াবেটিস থাকলে খেজুর খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
  • খেজুর খাওয়ার পরে অবশ্যই পানি পান করুন।

Leave a Reply