You are currently viewing স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন কমানোর উপায়

স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন কমানোর উপায়

ওজন কমানোর উপায় কি? (What is the Best Way to Lose Weight)

শরীরের অতিরিক্ত মেদ-ওজন আপনার স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট  করে দেয়ার  জন্য যথেষ্ট। তাইতো ওজন কমাতে আমরা কত কিছুই না করি। শরীর চর্চা থেকে শুরু করে খাবার দাবারের বেলায়ও আমরা সীমারেখা টেনে দিচ্ছি তবুও আশানুরূপ ফল মিলছে না কোনভাবেই। 

কেউ কেউ হয়তো ভাবছেন ডায়েট ছাড়া কিভাবে ওজন কমানো যায়, কেউ ভাবছেন ৭ দিনে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়,কেউ ভাবছেন কিভাবে দ্রুত ওজন কমানো যায়, কেউ ভাবছেন স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে ওজন কমানোর উপায় গুলো কি,কেউ ভাবছেন ওজন কমানোর খাবার তালিকা গুলো কি।  

 

স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন কমানোর উপায়-Fit-Bay

ওজন কমানোর উপায় ডায়েট চার্ট (Weight Loss Tips Diet Chart)

রাতের খাবার (Dinner)

রাতের খাবার বাদ দেওয়া যাবে না। তবে তা অবশ্যই হালকা খাবার হতে হবে। রাতে  ঘুমানোর অন্তত ৩-৪ ঘণ্টা আগে আপনার রাতের খাওয়া শেষ করুন। ভারী খাবার রাতের বেলা একেবারেই খাওয়া  উচিত হবে না।

হাটা (Walk)

খাবার খাওয়ার পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাঁটুন। যারা জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করার সময় পান না। তারা এই কাজটি  করলে অবশ্যই ফল পাবেন। এতে করে আপনার শরীরের মেটাবোলিজম বাড়াতে সহায়তা করবে এবং সেই সঙ্গে খাবারের ফলে বাড়তি মেদ শরীরে জমতে পারবে না। ফলে ওজনও বাড়বে না আপনার।

ফল (Fruit)

নিয়মিত খাবারের তালিকায় রাখুন ফল। বিশেষ করে মৌসুমী ফল বেশি খাওয়ার চেষ্টা করুন। শাকসবজির পাশাপাশি বাদাম, কুমড়ার বীজ, মৌসুমী ফল খান। গ্রীষ্মের এই সময়টাতে প্রচুর ফল পাওয়া যায়।এটির কারণে আপনার ক্ষিদে মেটানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষন পেট ভরিয়ে রাখবে। ফলে বারে বারে খেয়ে ওজন বাড়ার হাত থেকে রক্ষা পাবেন খুব সহজেই।যারা ডায়েট ছাড়া ওজন কমাতে চান তারা উপরোক্ত পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করলে আশা করি সহজেই আপনি আপনার শরীরের ওজন কমিয়ে, শরীরের সৌন্দর্যকে ধরে রাখতে পারবেন।

তিনবেলা খাবার (Three meals a day)

ওজন বাড়তে না দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।  সুতরাং তিন বেলা খাবার খান। আপনার ডায়েট চার্ট অনুযায়ী সকাল, দুপুর এবং রাতে খাবার খান। এতে আপনার ডাইজেস্ট প্রক্রিয়া যেমন ভালো থাকবে তেমনি শরীরে ওজন কমাতেও সাহায্য করবে।

পর্যাপ্ত ঘুম (Enough Sleep)

ওজন কমানোর আরেকটি উপায় হচ্ছে পর্যাপ্ত ঘুম। অবাক হলেও এটি প্রমাণিত। গবেষণায় দেখা যায়,  পর্যাপ্ত ঘুমের  অভাবে মানুষের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।  যার ফলে ওজনও বেড়ে যায়। তাই নিয়মিত আট ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। এতে  এতে শুধু আপনার শারীরিক স্বাস্থ্য নয় পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।

গরম পানি (Hot Water)

আমরা অনেকেই জানি ওজন কমাতে লেবু-মধু-গরম পানির উপকারিতার  বিষয়টি। তবে শুধু গরম পানি পান করেই যে ওজন কমানো সম্ভব এটা অনেকেরই অজানা। গরম পানি শরীরের টক্সিন দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়াও গরমপানি আপনার অস্বাস্থ্যকর ডায়েটের ফলে শরীরে যে বাড়তি মেদ জমে তা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করবে। সুতরাং নিয়মিত হালকা গরম পানি পান করুন।

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার করুন (Avoid excessive worry)

জেনে অবাক হতে পারেন, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার ফলে মানুষ বেশি খায়। ফলে মোটা হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। তাই নিজেকে ফিট রাখতে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা সম্পূর্ণভাবে পরিহার করুন। 

স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ওজন কমানোর উপায় -Fit Bay

ব্যায়াম (Exercise)

দ্রুত ওজন কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি উপায় হচ্ছে ব্যায়াম। ব্যায়াম আমাদের শরীরকে যেমন ফিট রাখে, ঠিক তেমনি আমাদের ওজন কমাতেও সাহায্য করে। তাই এক মাসে সাত কেজি বা তার বেশি কেজি ওজন কমাতে চাইলে আপনাকে প্রতিদিন কম করে হলেও দেড় থেকে দুই ঘণ্টা ব্যায়াম করতে হবে। এ সময়টুকুর মধ্যে আপনি হাঁটতে পারেন, দৌড়াতে পারেন। ওজন কমানোর জন্য সাঁতার কাটা ও সাইকেল চালানো আদর্শ ব্যায়াম। ব্যায়াম করার জন্য আপনাকে ঘরের বাইরে জিমনেসিয়ামে বা পার্কেই যেতে হবে, এমন কোনো প্রয়োজন নেই। আপনি ঘরের দৈনন্দিন কাজের মধ্যেই নিজের ব্যায়াম সেরে নিতে পারবেন।

 

চিনি পরিহার করুন (Avoid sugar)

কাঙ্ক্ষিত ওজন কমানোর জন্য খাদ্যতালিকা থেকে চিনি পুরোপুরি পরিহার করা আবশ্যক। কারণ, মাত্র ১ চা-চামচ চিনিতে ১৬ শতাংশ ক্যালরি থাকে, যা আপনার ওজন কমানোর সম্পূর্ণ অন্তরায়। তাই চা ও দুধে চিনি পরিহার করুন।

খাওয়ার আগে পানি খান (Drink water before eating)

১০ থেকে ১৫ মিনিট খাবার গ্রহণের আগে পানি পান করুন। আপনার হজমের সাহায্য করবে। যথাসম্ভব বাড়িতে তৈরি খাবার গ্রহণ করুন। জাঙ্কফুড পুরোপুরি পরিহার করুন।

সুষম খাবার গ্রহণ (Eat a balanced diet)

ওজন কমানোর অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে আপনাকে অবশ্যই সুষম খাবার গ্রহণ করতেই হবে। বেশি পরিমাণের ফলমূল, শাকসবজি ইত্যাদি খাওয়ার চেষ্টা করুন।

চর্বি বা চর্বিজাতীয় খাবার পুরোপুরি বাদ দিন। বাইরের তেলে ভাজা খাবার খাদ্যতালিকা থেকে একেবারেই বাদ দিতে হবে। ফাস্ট ফুড যথাসম্ভব কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। দুইবেলার মধ্যবর্তী সময়ে খিদে পেলে পপকর্ন, ফল বা ফলের জুস খেতে পারেন।

রাতে তাড়াতাড়ি খাওয়ার চেষ্টা করুন (Try to eat early at night)

ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে এক থেকে দেড় ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন। চেষ্টা করুন আটটার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিতে। কারণ, রাতে খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি শুয়ে পড়েন, তাহলে আপনার ওজন দ্রুত বেড়ে যাবে। রাতে ঘুমানোর আগে খিদে লাগলে ফলের জুস অথবা দুধ খেতে পারেন।

রঙিন সালাদ (Colorful Salad)

ওজন কমানোর উপায়, খাদ্যতালিকায় রাখুন বিভিন্ন রঙের সবজি বা ফল দিয়ে তৈরি সালাদ। এ সালাদের সঙ্গে টক দই মেশাতে পারেন। এতে উপকার পাবেন।

গ্রিন টি (Green Tea)

গ্রিন টিতে রয়েছে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান, যা আমাদের ওজন কমাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন চার কাপ করে গ্রিন টি ১ সপ্তাহ খেলে শরীর থেকে ৪০০ গ্রাম ক্যালরি ক্ষয় করা সম্ভব। এটাই আমাদের দেহের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ফলে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় গ্রিন টি অবশ্যই রাখুন।

বিএমআই মাপুন (Measure BMI)

ওজন কমানোর উপায় হচ্ছে ,ওজন নিয়ন্ত্রণ করা। সবার আগে বডি ইনডেক্স মেপে চলতে হবে। বিএমআইের অঙ্কটা হল যদি আপনার ওজন ৮০ কেজি এবং উচ্চতা ৬ ফুট হয় তবে ওই ব্যক্তির বিএমআই হবে ২৪.৭। বিএমআই রেট ১৮-২৫ থাকা উচিত। উচ্চতা ও ওজনকে কাজে লাগিয়ে বিএমআই রেট মাপা হয়।

উপসংহার 

যেহেতু আমরা ব্যায়াম না করে বা ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কমানোর উপায়গুলি উল্লেখ করেছি, এটি পরিকল্পনা করার এবং একই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার সময়। ডায়েট পরিবর্তন করা শুরু করতে হবে, একটি ভাল ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ করতে হবে, ওজন কমানোর চা (গ্রীন টি) মজুত করুন এবং নিয়মিত কিছু ধরণের শারীরিক কার্যকলাপ অনুশীলন করতে হবে। যাইহোক, মনে রাখবেন ওজন কমানোর বিষয়ে অপ্রয়োজনীয়ভাবে নিজেকে চাপ দেবেন না। এটি এমন একটি ক্ষেত্র যাতে সময় লাগবে কিন্তু অবশ্যই সঠিক দিকনির্দেশনা এবং পদক্ষেপের সাথে সত্য হবে।

Leave a Reply